নীল পত্র

প্রিয় মা,

মা, তুমি অনেক বেশি কষ্ট পাচ্ছ। এজ এ হিউম্যান বিং তুমি যে কষ্ট পাচ্ছ এটা বুঝা যায়। আমার কোনো পাওয়ার নাই তো। মানে সাধারণ, যেমন তোমার সামনে কেউ যদি পরে গিয়ে ব্যাথা পায় তাহলে তুমি বুঝবা যে সে আসলে কষ্ট পাচ্ছে। আমিও জানি যে তুমি তোমার সবচাইতে প্রিয় জিনিসটা হারাইছো তো তাই কষ্ট পাচ্ছ। এর থেকে বেশিটুকু বুঝতে হয়তো তোমার মাও পারবেন না। আর সেখানে আমি তোমার কেউ না। কিভাবে বুঝব তোমাকে? তবে আমি চেষ্টা করি যাতে তোমার একটু হাসির কারণ হতে পারি, তোমাকে যাতে এতটুকু বুঝতে পারি। কিন্তু এটা দিন দিন আরও অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে। মা তুমি এখন আমার থেকে সব লুকাও কেন? মা, এখন তুমি আমাকে মিথ্যা বলো। মা জানো, আমি কখনো মাহিরার কাছেও একটা কথা একবারের বেশি জিজ্ঞেস করি নাই, মনে হইতো যে, কেউ যদি কিছু না বলতে চায় তাহলে তাকে জোর করার কি দরকার! কিন্তু তোমার কাছে আসার পর ম্যাজিক্যালি আমি অনেক চেঞ্জ হয়ে গেছি, শুধু তোমার ক্ষেত্রে। মনে হয় কি, মা কেন আমাকে এটা বলল না, মায়ের কি হইছে, মা কি বেশি কষ্ট পাচ্ছে, মায়ের কি মন খারাপ, আমি মায়ের মন ভালো করতে পারবো না দেখে আমাকে বলে না, তাহলে আমি আছি কেন, শুধু মাকে বিরক্ত করতে, মা কি আমাকে ভালোবাসে না, মা কি আমার থেকে দূরে সরে গেলো, এমন আরও হাজার প্রশ্ন মাথায় ঘুরে। আমি জানি আমার এই জিনিস গুলো তোমাকে বিরক্ত করে। আর হবে না, মা। আমি আর কখনো তোমাকে কোনো কিছু নিয়ে জোরাজোরি করবো না। সরি মা। মা, তুমি অনেক ভালো একটা মানুষ। অনেক ভালো একটা মা। যে তোমাকে বিয়ে করবে, সে আসলেই অনেক ভাগ্যবান হবে। আর আমি এটা চোখ বন্ধ করে বলতে পারি যে যারা তোমাকে মা বলে ডাকার সুযোগ পাবে ওরা পৃথিবীতেই জান্নাত পাবে। মা, তুমি কখনো জোনাকি জ্বলতে দেখছো?তুমি যার যার লাইফের একটা ইম্পর্ট্যান্ট চ্যাপ্টার তারা দিনেও জোনাকি দেখে। তুমি বলতে শুরু করলে চারিদিক চুপ হয়ে যাবে। কেন জানো? কারণ তোমার মত করে গুছিয়ে, আদর দিয়ে, রসাত্মক করে কথা সবাই বলতে পারে না,তোমাকে বার বার শুনতে ইচ্ছা করে। তোমায় নিয়ে যারা এত সুন্দর সুন্দর কথা বলে বা লেখে তারা কি শুধুই এগুলো করে? করে না। তারা তোমার মধ্যে নুর দেখতে পায়। এটা এত বেশি দামী যে সবাই তা পায় না। কোটিতে হয়তো একজন বা দুইজন এমন থাকে। মা, তোমার প্রিয় জিনিসটা যেমন তোমার থেকে হারিয়ে গেছে আমার সবচাইতে প্রিয় জিনিসটাও আমার থেকে হারিয়ে গেছে। তাই বলে তোমার কষ্ট বোঝার মত সাহস আর শক্তির একটাও আমার নাই। হাত থেকে কাচের গ্লাস পরে গেলে যেমন সব টুকরো টুকরো হয়ে যায় কিছুই আর অবশিষ্ট থাকে না, সবচাইতে যত্নের জিনিস হারিয়ে গেলে তেমন লাগে, তাই না মা? যখনই মনে পরে তখনই একটু জরিয়ে ধরতে ইচ্ছা করে, আর তখন কাছে না পেলেই পাগল পাগল লাগে। মনে হয় এখনই চলে যাই, এত অস্বস্তি সহ্য করা যায় না, কিন্তু যাওয়াও যায় না। একটু কথাও বলা যায় না। তখন ভিতরে সব চুরমার হয়ে যায়। মা, এটাকেই কি কষ্ট বলে? কষ্টের এত শক্তি কেন? আর এই অসহনীয় কষ্ট গুলো তোমাকে জরিয়ে ধরে রেখেছে কেন? ধৈর্য তোমার অভ্যাস হয়ে গেছে কেন? মা, তুমি যেমন আমার হ্যাপিনেস, আমি কেন তোমাকে একবার হাসাতে পর্যন্ত পারি না? মা, তোমাকে দেখলে যেমন আমার স্বস্তিবোধ হয়, আমি তোমার কাছে পজিটিভ কিছুর কারণ কেন হতে পারি না? তোমার কষ্টের কারন আমি হওয়া সত্ত্বেও তুমি কেন আমাকে এখনো তোমাকে মা বলে ডাকতে দেও? কেন আমি তোমার কষ্টের ভাগ নিয়ে পারি না? তুমি কেন আমাকে তোমার কষ্ট, অভিমান, আক্ষেপ, সব কিছু থেকে দূরে রাখো? মা, তুমি আমাকে ব্লক দিয়ে দেও না কেন তোমার সব কিছু থেকে? তোমার মত আমি কাউকে দেখি নাই জানো। মাম্পি এমন একটা মানুষ যার উপর দশ হাজার মেট্রিক টন চাপ প্রয়োগ করলেও সে বলবে – ইটস ওকে। আমি তোমার কষ্ট গুলোর কারন হলাম, তাও আমাকে এভাবে সহ্য করো তুমি। তুমি কি মানুষ!! এত রহস্য কেন তোমার মধ্যে? মা, তুমি চিন্তা কইরো না। তোমার এত কষ্টের কথা আল্লাহ জানে। এটার সলুশন তোমার আমার কাছে নাই কিন্তু আল্লাহ তা জানেন। তোমার সাথে আর কিছু খারাপ হবে না, ইনশাআল্লাহ। আমার মায়ের সাথে আল্লাহ এমন করতে পারে না। তাকে এত কষ্ট দিতে পারে না। তার তো কোনো দোষ ছিল না। তাহলে শুধু শুধু সে কেন কষ্ট পাবে? কেন? আল্লাহ যাতে তোমার সব কষ্ট গুলো আমাকে দিয়ে দেয়। আমিন।। তাও তুমি একটু মন খুলে হাসো।।মা, তুমি অনেক বেশি কষ্ট পাচ্ছ। এজ এ হিউম্যান বিং তুমি যে কষ্ট পাচ্ছ এটা বুঝা যায়। আমার কোনো পাওয়ার নাই তো। মানে সাধারণ, যেমন তোমার সামনে কেউ যদি পরে গিয়ে ব্যাথা পায় তাহলে তুমি বুঝবা যে সে আসলে কষ্ট পাচ্ছে। আমিও জানি যে তুমি তোমার সবচাইতে প্রিয় জিনিসটা হারাইছো তো তাই কষ্ট পাচ্ছ। এর থেকে বেশিটুকু বুঝতে হয়তো তোমার মাও পারবেন না। আর সেখানে আমি তোমার কেউ না। কিভাবে বুঝব তোমাকে? তবে আমি চেষ্টা করি যাতে তোমার একটু হাসির কারণ হতে পারি, তোমাকে যাতে এতটুকু বুঝতে পারি। কিন্তু এটা দিন দিন আরও অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে। মা তুমি এখন আমার থেকে সব লুকাও কেন? মা, এখন তুমি আমাকে মিথ্যা বলো। মা জানো, আমি কখনো মাহিরার কাছেও একটা কথা একবারের বেশি জিজ্ঞেস করি নাই, মনে হইতো যে, কেউ যদি কিছু না বলতে চায় তাহলে তাকে জোর করার কি দরকার! কিন্তু তোমার কাছে আসার পর ম্যাজিক্যালি আমি অনেক চেঞ্জ হয়ে গেছি, শুধু তোমার ক্ষেত্রে। মনে হয় কি, মা কেন আমাকে এটা বলল না, মায়ের কি হইছে, মা কি বেশি কষ্ট পাচ্ছে, মায়ের কি মন খারাপ, আমি মায়ের মন ভালো করতে পারবো না দেখে আমাকে বলে না, তাহলে আমি আছি কেন, শুধু মাকে বিরক্ত করতে, মা কি আমাকে ভালোবাসে না, মা কি আমার থেকে দূরে সরে গেলো, এমন আরও হাজার প্রশ্ন মাথায় ঘুরে। আমি জানি আমার এই জিনিস গুলো তোমাকে বিরক্ত করে। আর হবে না, মা। আমি আর কখনো তোমাকে কোনো কিছু নিয়ে জোরাজোরি করবো না। সরি মা। মা, তুমি অনেক ভালো একটা মানুষ। অনেক ভালো একটা মা। যে তোমাকে বিয়ে করবে, সে আসলেই অনেক ভাগ্যবান হবে। আর আমি এটা চোখ বন্ধ করে বলতে পারি যে যারা তোমাকে মা বলে ডাকার সুযোগ পাবে ওরা পৃথিবীতেই জান্নাত পাবে। মা, তুমি কখনো জোনাকি জ্বলতে দেখছো?তুমি যার যার লাইফের একটা ইম্পর্ট্যান্ট চ্যাপ্টার তারা দিনেও জোনাকি দেখে। তুমি বলতে শুরু করলে চারিদিক চুপ হয়ে যাবে। কেন জানো? কারণ তোমার মত করে গুছিয়ে, আদর দিয়ে, রসাত্মক করে কথা সবাই বলতে পারে না,তোমাকে বার বার শুনতে ইচ্ছা করে। তোমায় নিয়ে যারা এত সুন্দর সুন্দর কথা বলে বা লেখে তারা কি শুধুই এগুলো করে? করে না। তারা তোমার মধ্যে নুর দেখতে পায়। এটা এত বেশি দামী যে সবাই তা পায় না। কোটিতে হয়তো একজন বা দুইজন এমন থাকে। মা, তোমার প্রিয় জিনিসটা যেমন তোমার থেকে হারিয়ে গেছে আমার সবচাইতে প্রিয় জিনিসটাও আমার থেকে হারিয়ে গেছে। তাই বলে তোমার কষ্ট বোঝার মত সাহস আর শক্তির একটাও আমার নাই। হাত থেকে কাচের গ্লাস পরে গেলে যেমন সব টুকরো টুকরো হয়ে যায় কিছুই আর অবশিষ্ট থাকে না, সবচাইতে যত্নের জিনিস হারিয়ে গেলে তেমন লাগে, তাই না মা? যখনই মনে পরে তখনই একটু জরিয়ে ধরতে ইচ্ছা করে, আর তখন কাছে না পেলেই পাগল পাগল লাগে। মনে হয় এখনই চলে যাই, এত অস্বস্তি সহ্য করা যায় না, কিন্তু যাওয়াও যায় না। একটু কথাও বলা যায় না। তখন ভিতরে সব চুরমার হয়ে যায়। মা, এটাকেই কি কষ্ট বলে? কষ্টের এত শক্তি কেন? আর এই অসহনীয় কষ্ট গুলো তোমাকে জরিয়ে ধরে রেখেছে কেন? ধৈর্য তোমার অভ্যাস হয়ে গেছে কেন? মা, তুমি যেমন আমার হ্যাপিনেস, আমি কেন তোমাকে একবার হাসাতে পর্যন্ত পারি না? মা, তোমাকে দেখলে যেমন আমার স্বস্তিবোধ হয়, আমি তোমার কাছে পজিটিভ কিছুর কারণ কেন হতে পারি না? তোমার কষ্টের কারন আমি হওয়া সত্ত্বেও তুমি কেন আমাকে এখনো তোমাকে মা বলে ডাকতে দেও? কেন আমি তোমার কষ্টের ভাগ নিয়ে পারি না? তুমি কেন আমাকে তোমার কষ্ট, অভিমান, আক্ষেপ, সব কিছু থেকে দূরে রাখো? মা, তুমি আমাকে ব্লক দিয়ে দেও না কেন তোমার সব কিছু থেকে? তোমার মত আমি কাউকে দেখি নাই জানো। মাম্পি এমন একটা মানুষ যার উপর দশ হাজার মেট্রিক টন চাপ প্রয়োগ করলেও সে বলবে – ইটস ওকে। আমি তোমার কষ্ট গুলোর কারন হলাম, তাও আমাকে এভাবে সহ্য করো তুমি। তুমি কি মানুষ!! এত রহস্য কেন তোমার মধ্যে? মা, তুমি চিন্তা কইরো না। তোমার এত কষ্টের কথা আল্লাহ জানে। এটার সলুশন তোমার আমার কাছে নাই কিন্তু আল্লাহ তা জানেন। তোমার সাথে আর কিছু খারাপ হবে না, ইনশাআল্লাহ। আমার মায়ের সাথে আল্লাহ এমন করতে পারে না। তাকে এত কষ্ট দিতে পারে না। তার তো কোনো দোষ ছিল না। তাহলে শুধু শুধু সে কেন কষ্ট পাবে? কেন? আল্লাহ যাতে তোমার সব কষ্ট গুলো আমাকে দিয়ে দেয়। আমিন।। তাও তুমি একটু মন খুলে হাসো।।

১১ জানুয়ারি, ২০২১

নীল পত্র – ০১

মা আমি জানি তুমি আমার কেউ না, তোমার সাথে আমার কোনো ব্লাড কানেকশন নাই। কিন্তু বিশ্বাস করো, মা বলে ডাকতে আমার যে কি ভালো লাগে। তুমি এটা বুঝবা না। আসলে মামা ঠিকই বলে যে তুমি আমার কেউ না, তোমার কিছুতে আমার এত কি? আমি কেন এমন করি? আসলে কেন এমন করি জানো? মায়ের থেকে বেশি কিছু তো হয় না কিন্তু তুমি আমার তার চেয়েও বেশি কিছু। আল্লাহ ছাড়া কেউ না এটা বুঝবে না। তুমিও না।মা জাহিদ মামা যেইদিন বলছিলো যে তার কাছে তার ফ্যামিলি আগে সেইদিন আমি ঠিক করি যে যাই হয়ে যাক আমি তোমাকে কিছুতেই যেতে দিব না।তুমি সহ্য করতে পারবা না। তাদের ফ্যামিলিকে মেনে নেয়া একটা মানসিক চাপ। আমি কখনো চাইনা তুমি সেই চাপে পরো।মা আমি জানি না কেন তোমাকে সব বলছি আর এটাও জানি না যে আমি কেন তোমাকে যেতে দেই নাই। যখনই ভাবি যে তোমার যেতে হবে সেখানে আমার মধ্যে সব ভেঙেচুরে যায়।আমি কেন জানি এটা নিতে পারি না।তুমি তো আমার কেউ না। কিন্তু এই অচেনা মানুষ যদি এর জন্য আমাকে ভুলে যায় তাহলে যেতে পারে।আমার আফসোস থাকবে না কোনো। আমার কাছে তোমার ভালো থাকাটা সবচেয়ে বেশি মেটার করে।এর বেশি আমি কিচ্ছু চাই না।সত্যি মা আমি আল্লাহর কাছে আর কিচ্ছু চাই না।আল্লাহ তোমাকে আর আম্মুকে যেন সবসময় ভালো রাখে।তুমি যেইদিন বলছিলা যে মাম্পির হাসি শেষ হয়ে যাবে।সারাদিন ধরে হাহা হি হি করতে থাকা মাম্পি আর থাকবে না।সেই দিন তোমার ফোন রাখার পর কেন যেনো আমার অনেক কান্না পাচ্ছিলো।ওইদিন আমি নিজের সব শক্তি দিয়েও পানি আটকাতে পারিনি।তার পর থেকে তোমাকে আরও ফ্রাংলি সবটা বলি। ভিডিও কলে সবটা বিয়ে দেখাই।যাতে তুমি বুঝতে পারো যে এই জায়গা তোমার না।তোমরা ইকুয়াল না। লাস্ট ১ সপ্তাহ ধরে আমি ভালো নাই মা। এতটা বেখেয়ালি হয়ে গেছি যে সিড়ি থেকে পরে গেছি তারপর ছাদ থেকে, তোমার এই অবস্থা। আমার কিচ্ছু ভালো লাগে না। একটা ডিপ্রেশন ছিলো আমার চারিদিকে। মনে হচ্ছিলো একটা ঘোরের মধ্যে পরে আছি। কিন্তু বের হতে পারতাছি না।তুমি সারারাত ধরে ঘুমাও না, মা আমি কি ঘুমাই? তুমি খাও না, মা আমিকি খাই? তুমি সারাটা দিন মন খারাপ করে থাকো আমি এই কয়দিন একটা ক্লাসও করি নাই। আমিই জানি আমার কেমন লাগছে এই কয়দিন। কতটা কষ্ট পাইছি। তুমি তো আমার কেউ না তাও আমি তোমার থেকে বেশি কষ্ট পাইছি। কেন পাইলাম মা? তোমকে তো আমি ভালোবাসি না। তাহলে এত টান কেন? আল্লাহই বা কেন তোমার মাঝে আমাকে এমন ভাবে সেট করে দিছে যার জন্য আমার এত কষ্ট হয়। মা, আমি যে তোমাকে পাবো না সেটা আল্লাহ আমাকে ওতপ্রতভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন। তাও আমি আল্লাহর কাছে তোমাকে চাই। খুব করে চাই। অনেক বেশি ভালোবাসি তোমায়। মা, আম্মু আমার আদি হলে তুমি আমার অন্ত। তুমি আমার মাঝে থাকবে আমার জীবনের শেষ সূর্যাস্ত পর্যন্ত। ভালোবাসি মা।।

২৭ নভেম্বর, ২০২০

নীল পত্র

তুমি তো থাকতে পারবা না। কিন্তু আমি আমার জন্য এমন একটা জায়গা চাই। প্ল্যান গুলো যদিও তোমাকে নিয়ে করা। তোমাকে ছাড়া এই জায়গার হয়তো কোনো মূল্যও নাই। তুমি যদি আমার সাথে না থাকতে চাও তাহলে কি আর করবো? আমি একাই থাকবো। স্মৃতি গুলো নিয়ে থাকবো। তোমাকে মিস করবো আর রবীন্দ্রসংগীত শুনবো প্রাণ ভরে। স্বপ্নের মত করে থাকবো। একা একা আকাশ দেখবো। কখনো ভাববো যে আমার জন্য আমার মা কষ্ট পেয়েছিলো। মনে করবো আমি আর আমার মা কত মজা করেছি এক সময়। সুখ গুলো যেমন ভাগ করে নিতাম দুঃখ গুলোও তেমনই ভাগ করা ছিল। কত মুহুর্ত ছিলো সুন্দর সুন্দর। সময় দেখতাম বার বার কখন ১১ টা বাজবে। একসময় মনে হতো ১১টা বাজা মানে মা আমার। আমি জানি আমি ভুল ছিলাম কিন্তু আমার সাথে মা তো ছিলো।
কখনো আকাশের দিকে তাকিয়ে তোমাকে বলবো – জানো মা আমি আজ আম্মুকে মিস করছি। কতদিন দেখি না আম্মুকে। জরিয়েও ধরি না। এত কাল বলেছি আমি আম্মুর থেকে দূরে চলে যাব আম্মুকে বোঝানোর জন্য কিন্তু কষ্টটা তো আমার বেশি হচ্ছে। আজ সত্যিই মনে হচ্ছে যে আমি তোমাদের থেকে অনেক দূরে। যেই দুরত্ব আমার ভেতরটা পর্যন্ত ছুঁয়ে ফেলেছে। তাও এটা ভেবে ভালো লাগছে যে তোমরা দুইজন আমাকে মিস করো।তোমাদের নিয়ে এখন আমি যেমনটা ফিল করি আই উইশ তখন তোমরাও আমাকে নিয়ে একই রকম ফিল করবা। অসম্ভব যন্ত্রণা হবে তখন জানো? মুখ বন্ধ করে সহ্য করতে হবে কিন্তু চোখ থেকে পানি পরা যাবে না। তোমাদের তো আমি আমিই সব না? কিন্তু জানো তো, দিন শেষে তোমরাই আমার সব। তোমাদের দুজনেরই আরও কেউ আছে। তারা আমার থেকে অনেক বেশি ইম্পর্ট্যান্ট। আমার থেকে তাদের প্রতি তোমাদের দাবীও বেশি থাকবে আর তাদেরও তোমাদের প্রতি অনেক অধিকার। যা আমার কোনোদিনই ছিলো না আর হবেও না। কিন্তু তবুও তোমাদের ছাড়া তো কেউ নেই। একা কি করে থাকবো বলো তো? আমার কি তোমাদের কথা মনে হবে না? আমার একার পৃথিবীটাও তো তোমাদের নিয়ে সাজানো। কিন্তু সেখানে তোমরাই নেই। তোমাদের দিনে একবারও সময় হবে না আমার সাথে একটু কথা বলার। তবে আম্মুও ভুলতে পারবে না আমাকে আর তুমিও না। আম্মু হয়তো রাগ হয়ে কথা না বলে থাকবে দিনের পর দিন কিন্তু তুমি থাকবা বছরের পর বছর। আম্মু হয়তো আমার রুমে কখনো ঢুকবে না কিন্তু তুমি তো আঁচল ছেড়ে শাড়ি কখনো পরবে না। আম্মু কি ধুলো ঝাড়তেও ঢুকবে না আমার রুমে? তুমি কি তোমার বরের কথায়ও আঁচল ছেড়ে শাড়ি পরবে না? ঘুম থেকে উঠলেই কি কান্না পাবে আমার? ঘুমোতে যাওয়ার আগের নেশাটা কি তখনও রয়ে যাবে?একা হাতে পেট ভরে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। আমার পেট কি ভরবে? তোমার পুচকুকে খাওয়ানোর সময় আমার কথা কি একবারও মনে হবে না? খেতে চাইবে না তাও জোর করে খাওয়াতে হবে তোমার। কিন্তু একসময় যে মায়ের হাতে খাওয়ার জন্য প্রতিদিন অপেক্ষা করতো সে তো আর চাইবে না। একদিন আমি একটা নতুন ডায়রি কিনবো। সেখানে এমন কিছু কথা লেখা থাকবে – ” মা তোমার কি আমার কথা মনে পরে? কত রাতে কত কিছু করেছি সবটা কি মনে আছে তোমার? কেউ তোমাকে জরিয়ে ধরলে আমার হিংসে হতো। কান্না চলে আসতো সাথে সাথে কিন্তু তখন সামনে যেতাম না তোমার। এখন তো কেউ তোমাকে অনেক বেশি জরিয়ে ধরে। তুমিও ছাড়ো না তাকে। এত আদর! এখন আমার হিংসে হয় না।এখন বার বার ভাবি – কি দোষ ছিলো আমার? আমি কেন তোমাকে পেলাম না? আজ তোমার থেকে অনেক দূরে থেকেও কেন তোমার কাছে যেতে ইচ্ছে করছে? কেন তোমার উপর কোনো দাবি করতে পারি না আমি? কেন আম্মুর উপর থেকে আমার সব দাবি মুছে গেছে?কেনো তোমার কোলে মাথা রাখার জন্যেও আমার কারো পার্মিশন নিতে হয়? তুমি কি আমার কেউ না? তাহলে কেনো এসেছিলে আমার কাছে? আমিতো যাইনি। তাহলে এখন তুমিই কেনো আমার থেকে দূরে চলে গেছো? তুমি অন্য কারো – এটা আমি কিভাবে মেনে নিব বলো তো?? একদিন কাজল পরেছিলে আমার জন্য। এখনো কি কাজল পরো? কাজল পরার সময় মনে হয় আমার কথা? নাকি অন্য কারো জন্য পরো? ওরা কি তোমার কাজল পরা দেখে আমার মত খুশি হয়? অনেকক্ষণ ধরে দেখতে থাকে তোমাকে? আমি যে কি বলছি এসব, বলো তো!! ওরা তো খুশি হবেই, ওরাই তো অনেকক্ষণ ধরে তাকিয়ে থাকবে আর তুমি তো ওদের জন্যই সাজবে। ওরাই তো তোমার সব।আর তুমি ওদের সব। আমি তো তোমার সেই খারাপ স্মৃতিটা। যা মনে পড়লে সমস্তটা ভেঙে যেতে থাকে তোমার। তোমার কষ্ট হয় অনেক। তাই হয়তো আর মনে করতে চাও না। এখানে সবটা ভুলে যাওয়াই শ্রেয়। চিরদিনের জন্য ভুলে যাও আমাকে, মামাকে।

মা তোমার স্মেলটাকি এখন অন্য কেউ পায়? কেন পায়? মা এটা না আমার ছিলো? এভাবে দিয়ে দিলা? আমার জিনিসের কোনো ভ্যালু নেই তোমার কাছে? আমার জিনিসটা আমাকে না জিজ্ঞেস করেই অন্য কাউকে দিয়ে দিলা? কেনো দিয়ে দিলা? তবে আমার কি কিছুই না? আমি কি তোমার থেকে এটাও দাবি করতে পারি না? এতটুকু অধিকারও কি আমার নেই? আম্মুর স্মেল পেয়েছি ২/৩ বার। তোমাকে পেয়েছি ১ বার। মা, আম্মু তো কখনো আমার ছিলো না কিন্তু তুমি তো একটা সময় আমার ছিলা। আমার মাকে কেন অন্যকাউকে দিয়ে দিলা? আমার কাছে আমার মা নেই কেন? আমার মাকে নিয়ে আর আম্মুকে নিয়ে দেখা স্বপ্নগুলো কেনো একা বাস্তবায়ন হচ্ছে? তাহলে কি আমার আসলেই কেউ নেই? এখানে একা এসে আমি ভুল করিনি তবে! ভেবেছিলাম আমার একা একা তোমাদের থেকে দূরে চলে আসাটা হয় তো আমার ভুল ছিলো।কিন্তু এখন মনে হচ্ছে আমি ঠিক ছিলাম। মা জানো, এখনো আমি তোমার সাথে ঘুরতে যাই। এক সাথে বসে আলতা দেই।শাড়ি পড়ি। সারাদিন আমি তোমার পিছন পিছন থাকি। রাত হলে তোমাকে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে থাকি। তোমাকে জরিয়ে ধরলে ঘুমের মধ্যে হুশ থাকে না আমার। এখনও আম্মু আমাকে ভাত খাইয়ে দেয়। একটু খাওয়ার পরে এখনও বলি আম্মু আর খাব না। আম্মু বকা দিয়ে সবটা শেষ করিয়ে বলে – এই ভাত গুলো এখন কার পেটে গেলো? জানো তোমার সাথে আমার ভিডিও কলে এখনো কথা হয়। তুমি আমাকে গল্প শুনাতে ব্যস্ত থাকো আর আমি মনোযোগ দিয়ে গল্প শুনতে থাকি। কিন্তু মা জানো এখন কেউ বলে না – আচ্ছা গুড নাইট, ঘুমাও এবার। কেউ এটাও বলে না – আচ্ছা কাটি।আমি এখন যেমনটা চাই আমার মাকে তেমনি ভাবে রাখতে পারি। আম্মুও আমার মতই থাকে। রঙ চা খায় আমার সাথে। বকা দেয় না আমাকে। কিন্তু আম্মুর বকা গুলো তো আমি মিস করি। কেউ তো কথাও বলে এখন আমার সাথে। জ্বর আসলে কেউ বলে না ওষুধ খেয়ে আসো। মা এখন আমি ওষুধ খাই। একদম ভালো হয়ে গেছি। তোমাকে কত বিরক্ত করছি এই ওষুধ নিয়ে আর দেখো এখন আমি কত ভালো হয়ে গেছি। সময় মত ওষুধ খাই। মা তোমার কথা আম্মুর কথা আমার অনেক মনে পরে। আসার সময় আমি তোমার ওড়না আর আম্মুর একটা ওড়না সাথে করে নিয়ে এসেছি। জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে থাকি। জানো মা তোমার দেয়া আলতার বোতলটা এখনো আছে আমার কাছে। যত্ন করে রেখে দিয়েছি।”

বাকিটা সেই ডায়রিতেই লিখবো।।

২৭ ডিসেম্বর, ২০২০

Design a site like this with WordPress.com
Get started